‘হেফাজতে ইসলাম’ এর আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ১০৪ বছর। ১৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা আল্লামা আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে তাকে ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শতবর্ষী আল্লামা আহমদ শফী দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।
তার জানাজায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় আসেন। মাদ্রাসার মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এমনকি মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়কেও প্রায় ১০ কিলোমিটার লম্বা লাইন হয়। ঢাকা থেকে আহমদ শফীর লাশবাহী গাড়িটি ভোরে রওনা হয়েছে এবং আনুমানিক সকাল ১০টায় মাদ্রাসায় পৌঁছে। হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর জানাজা ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ চার উপজেলায় বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি তদারকিতে থাকবেন সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট। হাটহাজারীতে চারজন এবং অন্য তিনজন থাকবেন তিন উপজেলায়।
১৯১৬ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় শিক্ষালাভ করেন। তিনি আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালনের পর ২০২০ এর ১৭ সেপ্টেম্বর এই মাদরাসার মহাপরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। এছাড়াও তিনি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি বেশ কিছু বই লেখেন। এগুলো হল, হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব, ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা, ইসলাম ও রাজনীতি, সত্যের দিকে করুন আহ্বান, সুন্নাত ও বিদ-আতের সঠিক পরিচয় এবং উর্দু ভাষায়- ফয়জুল জারি (বুখারির ব্যাখ্যা), আল-বায়ানুল ফাসিল বাইয়ানুল হক ওয়াল বাতিল, ইসলাম ও ছিয়াছাত এবং ইজহারে হাকিকাত।